ইজাযা ও সনদ বিভাগের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য

ইজাযা হচ্ছে আল কুরআনের পর-শব্দ উচ্চারণ ও পাঠরীতিকে প্রজন্য থেকে প্রজন্মান্তর হুবহু নকল ও অন হস্তান্তর প্রক্রিয়ার নাম। এ প্রক্রিয়ায় ইজাবা প্রদানকারী ব্যক্তি ইজাযা গ্রহীতাকে এ মর্মে প্রত্যায়িত করবেন হে তিনি এক বা একাধিক রিওয়াইয়াতে শতভাগ বিশুদ্ধতা সহকারে কুরআন তিলাওয়াতে সমর্থ আছেন। সুতরাং তিনি এরূপভাবে নিজে তিলাওয়াত করতে এবং অপরকে তিলাওয়াত করাতে পারেন।

মুয়াজ বিন জাবাল কুৱানিক ইনস্টিটিউটের কাজ হচ্ছে, এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত মহাগ্রন্থ আল- কুরআনের শাব্দিক উচ্চারণ বর্ণনা করা। এখানে কুরআনের বিদ্যাআতের ইজাযাহ সার্টিফিকেট প্রদানকারী ও কথার সাক্ষ্য দেন যে, ইজাযাহ প্রাপ্ত ব্যক্তির পড়া বুনাজানের বর্ণনা অনুযায়ী অথবা যে বর্ণনা সে গ্রহণ করেছে সেই বর্ণনা অনুযায়ী শতভাগ বিশুদ্ধ হয়েছে। কুরআনের শাব্দিক বর্ণনার ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে ভিডিও এবং অডিও সিস্টেম পদ্ধতি সরবরাহের মধ্য দিয়ে ইনস্টিটিউট কাজ করে। তারপর শিক্ষার্থী সরাসরি মৌখিক প্রক্রিয়া এবং কুরআনের শেষ পারাগুলোর ইজাযাহ সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য মদীনা মুনাওয়ারায় যাবে। কুরআনের ইজাযাহ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মুয়াজ বিন জাবাল ইজাযাহ সার্টিফিকেটের চারটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি সরবরাহ করে থাকে।

প্রথম ভিত্তি : ইজাযাহ প্রদানকারী শাইখ

তৃতীয় ভিত্তি : যে জিনিসের ইজাযাহ দেওয়া হয় তথা মহাগ্রস্থ আল-কুরআন বা কুরআনের ঐ বর্ণনা বা শিক্ষার্থী গ্রহণ করেছে।

চতুর্থ ভিত্তি : ইজাযাহার সার্টিফিকেট, যা ইজাযাহ প্রাপ্ত ব্যক্তির তিলাওয়াত বিশুদ্ধ এবং তা নাবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ও সাল্লাম পর্যন্ত ধারাবাহিক পৌছার প্রমাণ বহন করে। মুয়াজ বিন জাবাল কুরানিক ইনস্টিটিউট খোলার কারণ হলো, কুরআনের ইজাযাহর ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সুন্নাহ অনুকরণ করা।

ইজাযাহর সার্টিফিকেটের মূল ভিত্তি হলো, কুরআনুল করীমে মহান আল্লাহর বাণী- “তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না। এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্বে । অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন।" সুন্নাহ থেকে এর প্রমাণ হলো, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম তাঁর কোন কোন সাহাবাকে মৌখিক ইজাযাহ প্রদান করেছেন। যেমন তিনি উবাই বিন কা'ব (রাযি.) এর বেলায় বলেছেন, " “তোমাদের মাঝে সর্বাধিক কুরআন পাঠক উবাই। " এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম আব্দুল্লাহ বিন কাইস আবু মূসা আল আশআরীর পড়া শোনলে তিনি তার পড়ার প্রশংসা করেন। এটি হলো মৌখিক ইজাযাহ। অনুরুপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ এবং অন্যান্য সাহাবা যারা ক্বারী হিসেবে সাহাবাদের মাঝে প্রসিদ্ধ ছিলেন, তাদের সকলেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম কর্তৃক মৌখিক ইজাযাহ বা স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে যারা হিফযুল কুরআন করেন বা কুরআন শিক্ষা দেন, তারা ইজাযাহার সার্টিফিকেটের ব্যাপারে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। যার কারণে মুয়াজ বিন জাবাল কুরানিক ইনস্টিটিউট ইজাযাহার সার্টিফিকেটের সুন্নাহকে জীবিত করার জন্য মদীনা মুনাওয়ারার ক্বারীদের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে ।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :

  • ১. কুরআনিক সনদ ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং বাংলাদেশে এর ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করা।
  • ২. ইলমে ওহীর সংরক্ষণ পরম্পরায় ভুল ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করা।
  • ৩. ইজাযা ও সানাদে সালফে সালিহীনের নীতি অনুসরণ করা।
  • ৪. ইজাযা প্রদানকারী ও গ্রহীতা উভয়ের মধ্যে ফলপ্রসুও কল্যাণজনক সম্পর্কের সেতুবন্ধন অটুট রাখা।
  • ৫. আল কুরআনের ধারক-বাহকদের আর্থিক ও বৈষয়িক মানোন্নয়নে সহায়তা করা। সম্মানজনক সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মপরিচয়ে বিকশিত করা।
  • ৬. কিরাআত এবং রেওয়াতের ইলমের প্রসার ঘটানো এবং কুরআনের দশ কিরাআতের উপর বিশেষজ্ঞ কারী তৈরী করা।
  • ৭. কুরআনুল করীমের হিফয এবং শিক্ষার জন্য ইজাযাহ প্রাপ্ত শিক্ষক এবং ইলমূল কিরাআত এবং হাফস আন আসিম এর রেওয়াতের উপর সুদক্ষ বিশেষজ্ঞ তৈরী করা।

বৈশিষ্ট্য:

  • ১. রিওয়ায়েতে হাফস আন আসিমের উপর ইজাযা ও সানাদে মুস্তাসিল লাভ করা।
  • ২. ইসনাদ' সালফে সালিহীন কর্তৃক প্রবর্তিত রীতি ও উত্তরসূরীদের এ রীতি-নীতি মেনে চলা একটি জ্ঞানগত আমানত।
  • ৩. ইলমে ওহীর ধারাবাহিকতা ও পারমপরিকতাকে নির্ভুল ধারায় প্রবাহিত করা।
  • ৪. আল কুরআনের নির্ভুল পঠন-পাঠনে শৃঙ্খলাহীনতা ও সত্য-মিথ্যার মিশ্রন থেকে মুক্ত রাখা।
  • ৫. জিবরাইল (আ.) ও নবী করিম (সা.) এর পাঠরীতিকে অবিকৃতভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আত্মস্থ করানো যাতে ক্বিরাতের প্রক্রিয়াটি হুজ্জাতের স্তরে উন্নীত হয়।
  • ৬. হারামাইন শরিফাইন এর ইমাম ও খতিবদের তত্ত্বাবধানে খিদমাতুল ওয়াহইয়াইন এর শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ গীলানের সরাসরি পরিচালনায় পরিচালিত।