কুরআন মুখস্থকরণ ও তাফসির বিভাগের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য

শ্বমানবতার মুক্তির মহাসনদ, শ্বাশ্বত জীবন বিধান আল কুরআন জ্ঞান বিজ্ঞানের সর্বোত্তম ও একমাত্র নির্ভূল উৎস। সকল মানুষের কাছে সহজ সরলভাবে আকর্ষণীয় পন্থায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আল কুরআনের ধারক বাহকদের গড়ে তুলা সময়ের অন্যতম দাবী। আল-কুরআন হিফজ করাই চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়, বরং কুরআন ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তা পুরোপুরি অনুশীলণ ও বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে আল-কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য। হাফিজুল কুরআন হলো তাঁরা যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ঐশী জ্ঞানের ধারক বাহক বাণিয়েছেন। মহান আল্লাহ প্রদত্ত এ নিয়ামতের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন আল-কুরআনকে বিশুদ্ধভাবে শিক্ষা করার পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিকভাবে জানা, বুঝা এবং প্রচার করা।

বাংলাদেশে হাফিজি মাদরাসা গুলোতে হিফজ সমাপ্ত করার পর শিক্ষার্থীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি অংশ শুধু মাত্র হিফজুল কুরআনকে জীবন-যাপনের অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করে জ্ঞানার্জনের পাঠ চুকিয়ে জীবিকা অর্জনে নেমে পড়ে। অপর অংশ গতানুগতিক ধারায় বিদ্যার্জনে ব্রতী হয়।

জ্ঞান বিজ্ঞানের মূল উৎস ও অমূল্য সম্পদ আল-কুরআনকে বুকে ধারণ করার পরও বিষয় ভিত্তিক এবং যুগচাহিদার ভিত্তিতে নিজেকে প্রস্তুত করতে না পারায় জ্ঞানের অথৈ সাগর থেকে মুক্তা কুড়ানো সম্ভব হয়না। মুয়াজ বিন জাবাল (রা:) কুরআনিক ইনস্টিটিউট সিলেট সময়ের এ দাবী পূরণ করার জন্যেই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হাফিজে কুরআনদের জন্য অর্থসহ বিষয়ভিত্তিক কুরআন মুখস্থ করণ বিভাগ চালু করেছে।

আল কুরআনের বিষয় ভিত্তিক আয়াত সমূহ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় মুখস্থ করার সাথে সাথে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সিলেবাস অনুসারে ৮ম শ্রেণী থেকে আলিম পর্যন্ত অধ্যয়নের পাশাপাশি আরবি ও ইংরেজি ভাষায় ৪টি দক্ষতা ( শুনা, বলা, পড়া, ও লিখার) অর্জনের সূবর্ণ সুযোগ গ্রহণ করার জন্য অনুসন্ধিৎসু অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সু-স্বাগতম জানানো হলো।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :

ইলম হাসিলের মাধ্যমে খালিক তথা স্রষ্টাকে জানা, সৃষ্টির উদ্দেশ্য উপলব্ধি করা। মহান আল্লাহর ঘোষণা :- (হে রাসূল) আপনি বলুন; আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও স্মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। এ উদ্দেশ্য হাসিলে নিম্নোক্ত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • ১। হাফিজকে আল-কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আক্বিদা শিক্ষা দেয়া।
  • ২। মাধ্যমিক পরবর্তী অধ্যয়নের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা তৈরী করা।
  • ৩। কুরআনিক মাদরাসা পরিচালনা ও মসজিদে ইমামতি করার ইলমী এবং প্রশাসনিক যোগ্যতা সম্পন্ন কুরআনের শিক্ষক তৈরী করা।
  • ৪ । কুরআনিক সনদ ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং বাংলাদেশে এর ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করা।
  • ৫। এমন দাঈ তৈরী করা যিনি পবিত্র কুরআনকে বিষয়ভিত্তিক ভাবে মুখস্থ করে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ব্যাখ্যা করার যোগ্যতা সম্পন্ন হবেন।
  • ৬। জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য দক্ষ হাফিজ ও ক্বারী প্রস্তুত করা।

বৈশিষ্ট্য:

  • ১. রিওয়ায়েতে হাফস আন আসিমের উপর ইজাযা ও সানাদে মুস্তাসিল লাভ করা।
  • ২. ইসনাদ' সালফে সালিহীন কর্তৃক প্রবর্তিত রীতি ও উত্তরসূরীদের এ রীতি-নীতি মেনে চলা একটি জ্ঞানগত আমানত।
  • ৩. ইলমে ওহীর ধারাবাহিকতা ও পারমপরিকতাকে নির্ভুল ধারায় প্রবাহিত করা।
  • ৪. আল কুরআনের নির্ভুল পঠন-পাঠনে শৃঙ্খলাহীনতা ও সত্য-মিথ্যার মিশ্রন থেকে মুক্ত রাখা।
  • ৫. জিবরাইল (আ.) ও নবী করিম (সা.) এর পাঠরীতিকে অবিকৃতভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আত্মস্থ করানো যাতে ক্বিরাতের প্রক্রিয়াটি হুজ্জাতের স্তরে উন্নীত হয়।
  • ৬. হারামাইন শরিফাইন এর ইমাম ও খতিবদের তত্ত্বাবধানে খিদমাতুল ওয়াহইয়াইন এর শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ গীলানের সরাসরি পরিচালনায় পরিচালিত।